ঘুম কি? এই প্রশ্ন যদি করা হয় অলস একজন মানুষ বলবেন ঘুম আমার ভালোবাসা,একটা শিশু বলবে ঘুম মানে চোখ বন্ধ করে রাখা।মোটামুটি জানেন এমন একজন বলবেন ঘুম হচ্ছে আমাদের শরীরের বিশ্রাম, কোষের বিশ্রাম।
আচ্ছা মূলত ঘুম হচ্ছে ব্রেইনের বিশ্রাম। ব্রেইন যখন ক্লান্ত হয়ে যায় তখনই আমাদের ঘুম পায়।ব্রেইন হচ্ছে আমাদের শরীরের নিয়ন্ত্রক।আমাদের শরীরের রিমোট তাঁর কাছেই।এই ধরেন আপনার ইচ্ছা হলো এখন একটু বাইরে গিয়ে আড্ডা দিতে,ইচ্ছা হলো এক প্লেট কাচ্চি সাথে বড় আলু দিয়ে ডিনার সেরে ফেলতে।কিংবা ইচ্ছা হলো প্রিয় মানুষটার হাত ধরে একটূ বৃষ্টিতে হাটতে,এইসবকিছু একজন নিয়ন্ত্রন করে।আমাদের ব্রেইন বাঁ মস্তিস্ক।
ঘুম হচ্ছে ব্রেইনের খাবার।আপনি না খেয়ে থাকলে আপনার কেমন লাগে?খিদায় ছটফট করি আমরা যদি না খেয়ে থাকি।ঠিক ঘুমের বেলাতেও একই জিনিস ঘটে।আর এখনকার প্রজন্মের প্রায় সবারই রাত জাগার নেশা।রাত জেগে গেইম খেলা,ফেইসবুকিং করা,মুভি দেখা কিংবা অনেকের পড়াশোনার শুরু হয় রাত গভীর হলেই।রাত জেগে আবার অনেকে ফোনে কথা বলে লম্বা সময়।এতে ক্ষতির পরিমাণ বাড়ে আরো কয়েকগুন। এখনকার প্রজন্মের ঘুমের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে চরম।
কম ঘুমালে আসলেই কি আয়ু কমে যায়? হ্যাঁ, ২০১০ সালের একটা গবেষণাতে দেখা যায় কম ঘুমই অকাল মৃত্যুর কারণের মাঝে একটি।কম ঘুম ধিরে ধিরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয় আমাদেরকে।
অনেকে বলে,আচ্ছা আমিতো রাত ৩ টায় ঘুমালেও দিন ১০ টায় উঠলাম.৭ ঘন্টা তো হয়েছে কিন্তু আমার ঘুম ঘুম ভাব কাটেনি কেন?এর উত্তর হচ্ছে ঘুমের একটা সাইকেল আছে।আপনি ৭ ঘন্টা ঘুমালেই কোয়ালিটি স্লিপ হবে ব্যাপারটা মোটেও এমন না।জেনে অবাক হবেন যে, টেস্টোস্টেরন উৎপাদনের জন্য রাতে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে কমপক্ষে তিন ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন! রাতে না ঘুমিয়ে জেগে থাকলে এর উৎপাদন ব্যাহত হয়। অপর্যাপ্ত ঘুম গ্রোথ হরমোন উৎপাদনেও বাধা দিতে পারে বিশেষ করে বাচ্চা ও কিশোর- কিশোরীদের ক্ষেত্রে। পর্যাপ্ত ঘুম এবং ব্যায়াম পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে গ্রোথ হরমোন উৎপাদনে সাহায্য করে থাকে।
কম ঘুমানোর ফলে অনেকগুলো জটিল সমস্যা দেখা যায় যেমন- দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যায়,ওজন বেড়ে যায়,ব্লাডপ্রেশার বাড়ে ,ডায়বেটিসের মত রোগের ঝুঁকি বাড়ে,শ্বসনতন্ত্রে সমস্যা দেখা দেয়,এবং সেন্ট্রাল নার্ভ সিস্টেমের ক্ষতি হয়।
আমাদের উচিৎ সঠিক সময়ে ঘুমানো এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম নিশ্চিত করা।একজন মানুষের দেহে খাবারের চাহিদার মতই ঘুমেরও চাহিদা আছে।আর এই চাহিদা পূরন না হলে শরীর অদ্ভুত আচারণ করা শুরু করবে।
প্রাপ্তবয়ষ্ক ব্যাক্তির সাধারণত দৈনিক কমপক্ষে ৭-৯ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন। এর কম-বেশি ঘুমিয়ে কেউ কমফোর্টেবল ফিল করলে সমস্যা নেই।