ধর্মশালায় ২য় ম্যাচে যখন ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত বাংলাদেশ ঠিক এর আগের রাতেই বৃষ্টি হলো।যদিও আফগানদের সাথে যেই পিচে খেলা হয়েছে আজকে আর সেই পিচে হবেনা খেলা এমনটাই জানিয়েছিলো ক্রিকিনফো।
ম্যাচ হারার দোষ কোনদিকে যায়?অনিয়ন্ত্রিত ,বাজে লাইনে বোলিং করা নাকি টপ অর্ডারের তাসের ঘরের মত ভেঙে পরা?নাকি টস জিতে এটাকিং মাইন্ডেড ইংল্যান্ডকে ব্যাটিং করতে পাঠানো?পিচে সুইং না থাকলেও টপলি ঠিকই আদায় করে নিয়েছেন সুইং।আধুনিক ওডিয়াই ক্রিকেটে ম্যাচ জিততে চাইলে অবশ্যই ৩০০-৩২০+ রান চেজের সাহস এবং সক্ষমতা আপনার থাকতে হবে।যদিও ৩৬৫ রান দেখে মনেই হচ্ছিলো অন্তত ৫০-৬০ রান বেশি দিয়েছে বোলাররা।সাথে তো ছিল যথারীতি বাজে ব্যাটিং ডিসপ্লে।এই পিচে চেইজ করতে গেলে প্রথম ১০ ওভার দেখে খেললেই পিচটা ব্যাটারদের জন্য মন্দ থাকেনা।কিন্তু বাংলাদেশি ব্যাটাররা হয়তো ভুলেই গিয়েছিলো রানের টার্গেট ছিলো ৩৬৫।মিনিমাম ব্যাটিং সেন্সের অভাবে একে একে আউট হতে থাকেন টপ অর্ডারের ৪ ব্যাটার। ইংল্যান্ড যেখানে ইন ফর্ম মঈন আলীকে বসিয়ে টপলিকে দলে এনে আমাদের ব্যাটিং লাইন ভেঙে দেয় সেখানে আমরা আফসোস করতে থাকি স্কোয়াড নিয়ে আর অফফর্মের প্লেয়ারদের সুযোগ দিতে থাকি ম্যাচের পর ম্যাচ।ম্যাচুরিটির অভাব না মিনোজ তকমা পাওয়ায় নিজেদের প্রকৃতার্থে মিনোজ ভাবা ঠিক কোন কারনে বড় দলের সাথে আমাদের ভরাডুবি হয় তা জানা এখন অতিব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
টস জিতে ফিল্ডিং করার ডিসিশন নেয় অধিনায়ক সাকিব।দলে একটি পরিবর্তন ,মাহেদি শুরু করেছে রিয়াদের জায়গায়।যা আগেই কিছুটা অনুমেয় ছিলো।কিন্তু এইদিন শুরুতে এত বাজে বোলিং করবে বাংলাদেশ এটি মোটেও অনুমেয় ছিলোনা।শুরুটা দারুন করেন দুই ওপেনার মালান এবং বেয়ারস্টো।দুইজনেই তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি।দলীয় রান যখন ১১৫ ১৭ ওভার ৫ বলে,তখন বেয়ারস্টোকে দারুন এক বোলে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন সাকিব।কিন্তু আরেক প্রান্তে ঠিকই টিকে ছিলেন ভয়ানক মালান।বোলারদের অনিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আরেকটি জুটির দেখা পেয়ে যায় ইংল্যান্ড।রুটও সাবলীলভাবে ব্যাটিং চালাতে থাকে।মালান তুলে নেন সেঞ্চুরি এবং রুটও পেয়ে যায় ৫০। এরপর আরো বিধ্বংসী হয়ে ১৪০(১০৭) করে মাহেদির বলে ফিরেন মালান।এর আগেই রান হয়ে যায় পাহাড়সম।রুটকে ফেরান শরিফুল এবং ভয়ানক হবার আগেই বাটলারকে ফেরান শরিফুল।এরপরে লিভিংস্টোনও আউট হন ০ রানে শরিফুলের বলে।শেষ ১০ ওভারে ভাল বোলিং করলেও রান হয়ে যায় ৩৬৪।যা বাংলাদেশের ব্যাটিং স্পেশালি ওপেনিং বিবেচনায় প্রায় অসম্ভব.৩ উইকেট নেন শরিফুল,৪ উইকেট মাহেদি এবং একটি করে উইকেট নেন সাকিব-তাসকিন।কিন্তু আজকে সব বোলারই ছিলেন খরুচে।সাকিব দেন সবচেয়ে কম ৫২ রান।আশাহত করেন মুস্তাফিজ,তাসকিন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে লিটন ভাল শুরু করলেও তানজিদ তামিম আবারো ব্যর্থ হন।মাত্র মাত্র ১ রান করে কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরেন টপলির বলে।এরপরের সময়টা শুধুই ইংল্যান্ডময়।লিটন এক প্রান্ত আগলে রাখলেও একে একে ফিরে যেতে থাকেন শান্ত,সাকিব এবং মিরাজ।গোল্ডেন ডাকে ফিরে জান ইনফর্ম ব্যাটার শান্ত।সাকিব করেন এক রান। এদের সবার উইকেটই পান বাঁ হাতি পেসার টপলি।যাকে এই ম্যাচেই দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয় মঈন আলীর জায়গায়।এটাই হয়তো বড় দল এবং আমাদের মাঝে তফাৎ। তাঁদের পরিবর্তন কাজে দিলেও আমাদেরটা দেয়না।৮ রান করে ওকসের বলে ফিরেন আরেক ভরসা মিরাজ।আর এক পাওয়ারপ্লেতেই দল হারায় ৪ উইকেট।আপনি যখন ৩৬৫ রানের মত রান চেইজ করতে নামবেন আর আপনার ব্যাটিং তাসের ঘরের মত ভেঙে পরবে তখন আপনি জেতার আশা আর করতে পারবেননা।
লিটন দেখা পায় হাফসেঞ্চুরির।একমাত্র লিটকেই দেখা গিয়েছে সাবলীল ব্যাটিং করতে।মুশফিককে সাথে নিয়ে এরপর ১৯ তম ওভারে ৫০ রানের জুটি পূরন করেন লিটন।হারের ব্যবধান যতটা কমবে ততটাই মঙল বাংলাদেশের জন্য।রাউন্ড রবিন সিস্টেমের টুর্নামেন্টে নেট রানরেইট অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।২১ তম ওভারে বোলিং চেঞ্জ আনে ইংলিশ অধিনায়ক বাটলার।বোলিং করতে আনেন ওকসকে।আর এতেই আউট হয়ে যান সেট ব্যাটসম্যান লিটন। ৬৬ বলে ৭৬ রানের এক লড়াকু ইনিংস খেলে ড্রেসিংরুমে ফিরেন লিটন।বাংলাদেশের হয়ে যেন একাই লড়ে গিয়েছেন লিটন।৬১ বলে ৫০ তুলে নেন মুশফিকও।হৃদয়কে সাথে নিয়ে ব্যাট করতে থাকেন স্বাভাবিকভাবে।যদিও তখন ম্যাচ হাত ফসকে গিয়েছে।ফিফটি করেই ক্যাচ দিয়ে আউট হন মুশফিক।উইকেট নেন,সেই টপলি।
তারপর হৃদয় আর মাহেদি ব্যাটিং করতে থাকে।তখন হয়তো একটাই লক্ষ্য ছিল,আর তা হচ্ছে সম্মানজনক হার এবং নেট রানরেইট যাতে বেশি কমে না যায়।কিন্তু ৩৯ করে লিভিংস্টোনের শিকার হন হৃদয়।একে একে ফিরে যান বাকী ব্যাটাররা।শেষে টেইলেন্ডারদের কল্যানে ৪৮.২ ওভার ব্যাট করে ২২৭ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।আর ইংল্যান্ড পায় ১৩৭ রানের একটি সহজ জয়।ম্যাচসেরা হন মালান।
আগামী ম্যাচের প্রতিপক্ষ বর্তমানে টেবিলের টপে থাকা নিউজিল্যান্ড।খেলা হবে ১৩ তারিখ দুপুর ২.৩০ মিনিটে চেন্নাইয়ের মাঠে।