মাইজদীতে ঝুঁকিপূর্ণ বহুতল ভবনে গড়ে ওঠা শতাধিক রেস্টুরেন্টে নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। অনেক ভবনে ওঠা-নামার জন্য লিফট ছাড়া বিকল্প কোনো ব্যবস্থাও রাখা হয়নি। সরেজমিনে দেখা গেছে, সুপার মার্কেটের পাঁচতলায় ফুড ফিয়েস্তা, ফুড ওয়ার্ল্ড, প্রধান সড়কে আমানিয়া, টোকিও ফুড অ্যান্ড কাবাব হাউজ, মোগলে দরবার রেস্টুরেন্ট, মোহাম্মদিয়া, রহমানিয়া, সুপার মোহাম্মদিয়া, রুফটপ, হাউজিং এলাকায় আরডি ফুড জোনসহ অসংখ্য খাবারের রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। এসব ব্যাঙের ছাতার মতো যেনতেনভাবে গড়ে উঠা রেস্টুরেন্টের ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তরের সনদসহ কোনো অনুমোদন নেই। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চলছে এসব রেস্টুরেন্ট। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এসব ‘মৃত্যকূপ’ গড়ে উঠছে বলেও অভিযোগ অনেকের।
বহুতল ভবনের একটি রেস্টুরেন্টে আসা জেলা ফুটবল দলের খেলোয়াড় মাহবুবুল ইসলাম হিমু বলেন, পরিবার নিয়ে সবাই এসব রেস্টুরেন্টে খেতে আসেন। কিন্তু এগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। প্রশাসনকে এসব বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।
সামছুদ্দিন আহমেদ শাওন নামে আরেকজন বলেন, প্রশাসনের তদারকির অভাবে শহরে রেস্টুরেন্ট নামের এসব মৃত্যুকূপগুলো গড়ে উঠছে। বড়ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ছাড়া দপ্তরগুলো তৎপর হয় না। বিষয়টি দুঃখজনক।
নোয়াখালী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সুজিত বড়ুয়া বলেন, অপরিকল্পিত বহুতল ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা সাততলা পর্যন্ত অনুমোদন দেই। এর বাইরে বহুতল ভবনের বিষয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন মাস্টার কবির হোসেন বলেন, অবৈধ রেস্টুরেন্টের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। নোয়াখালী সুপার মার্কেট, আমানিয়া, টোকিও কাবাবসহ অন্তত ১৫টি রেস্টুরেন্টকে ইতোমধ্যে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবগুলো রেস্টুরেন্টেকে নোটিশ পাঠানো হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মিহির লাল সরদার বলেন, কিছু রেস্টুরেন্ট পরিবেশ সনদের জন্য আবেদন করেছে। জনবল সংকটে অনেক সময় অভিযান চালানো সম্ভব হয় না। তারপরও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক দেওয়া মাহবুবুর রহমান ঢাকায় ডিসি সম্মেলনে রয়েছেন। তার নম্বরে ফোন দিলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না মাহমুদ বলেন, এ বিষয়ে স্যারের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযান চালানো হবে।