একই দিনে ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষা এবং বায়োমেট্রিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট (আঙুলের ছাপ) দেওয়ার নতুন কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), নোয়াখালী সার্কেল। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে উক্ত লাইসেন্স ডাকযোগে আবেদনকারীর বাড়িতে পৌঁছে যাবে।এক দিনে আঙুলের ছাপ ও পরীক্ষা দিতে পেরে খুশি ড্রাইভিং লাইসেন্সপ্রত্যাশীরা।
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিআরটিএ’র উদ্যোগের বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে জেলা পর্যায়ে উক্ত কার্যক্রম চালুর ফলে দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসানের আশা করছেন লাইসেন্স প্রত্যাশী ও বিআরটিএ কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, পূর্বে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য বহুবার বিআরটিএ কার্যালয়ে যেতে হতো। পেশাদার লাইসেন্স পেতে পরীক্ষা নেয়ার পর ফলাফল দেয়া হতো। সব কার্যক্রম শেষ করে সপ্তাহ খানেক পর নেয়া হতো আঙুলের ছাপ। এখন এক দিনে আঙুলের ছাপ, পরীক্ষা নেয়াসহ সব কার্যক্রম শেষ করে ১৫ দিনের মধ্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রস্তুত হয়ে যাবে। এ লাইসেন্স ডাকযোগে আবেদনকারীর বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হবে। একদিনে আঙুলের ছাপ ও পরীক্ষা দিতে পেরে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রত্যাশীরা খুশি।
চাটখিল উপজেলার মো. আজাদ উদ্দিন বলেন, বছরের পর বছর ঘুরেও ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায় না। প্রতিদিন বিআরটিএ অফিসে লাইসেন্সপ্রত্যাশী শত শত মানুষ ভিড় করেন। আজ মাত্র ২ মিনিটে আঙুলের ছাপ নিয়ে নিলেন, কোনো ভোগান্তি হলো না। আমরা সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই।
ইয়াসিন আরাফাত নামের আরেক চালক বলেন, দুর্ভোগ আর ভোগান্তির অপর নাম বিআরটিএ অফিস। টাকা বা দালাল ছাড়া মেলে না ড্রাইভিং লাইসেন্স। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত সত্যি দারুণ ও যুগান্তকারী।
লাইসেন্স নবায়ন করতে আসা জামাল হোসেন বলেন, আগে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হতো। অনেকবার আসা লাগতো। একইদিনে সব কিছু পাওয়ায় আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। নোয়াখালী বিআরটিএ অফিসকে ধন্যবাদ জানাই।
আরেক চালক মো. বেলাল হোসেন বলেন, আমাদেরকে হয়রানি থেকে নোয়াখালী বিআরটিএ অফিস যে একই দিনে পরীক্ষা, বায়োমেট্রিক নিচ্ছেন এটা আমাদের খুব উপকারী হয়েছে। কুরিয়ারে আমার বাসায় লাইসেন্স পৌঁছে যাবে। আমরা সবাই অনেক খুশী।
বিআরটিএ নোয়াখালীর মোটরযান পরিদর্শক মাহবুব রাব্বানী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানের অংশ হিসেবে বিআরটিএর চেয়ারম্যান ও মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের দিক নির্দেশনায় একই দিনে পরীক্ষা ও বায়োমেট্রিক নোয়াখালীতে শুরু হয়েছে। এখন আমরা পেপারলেস অফিস হচ্ছি। কোথাও কোনো কাগজ জমা দিতে হবে না। সব কিছু অনলাইনে। ড্রাইভিং লাইসেন্স গ্রাহকের ঠিকানায় কুরিয়ারে চলে যাবে।
বিআরটিএ নোয়াখালীর সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আগে পরীক্ষার্থীদের বিআরটিএ অফিসে একাধিকবার আসতে হতো। এখন একবারই আসবেন লাইসেন্স প্রার্থী। এক দিনে লাইসেন্স প্রার্থী ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা দেবেন এবং একই দিনে বায়োমেট্রিক দিয়ে চলে যাবেন। এতে গ্রাহকসেবার মান বাড়বে। বায়োমেট্রিক একবারের জন্যই নেয়া হবে। কিন্তু যিনি ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় অকৃতকার্য হবেন, তাকে ফের ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা দিয়ে কৃতকার্য হতে হবে। পরে তার আর কোনো বায়োমেট্রিক দিতে হবে না।